হজ্বব্রত।

"হজ্বব্রত"
জিয়াউল হক
অদৃশ্য দীর্ঘ বিরতির পর আপনাদের সামনে আবার হাজির হল এইবারের বিষয় হজ্ব ব্রত।
আগের পোষ্ট গুলো অনেকে হইত ভুলেগেছেন বা মনে আছে প্রবাস বিরায়ানী,স্যালসম্যান,দিঘির কান্না,চিঠি,এই বিষয়ের অদৃশ্য সিরিয়াল লেখা গুলো আপনাদের কাছ থেকে যথেষ্ট সারা পেয়েছি অনেকে পেইজবুকে লাইক কমেন্ট দিয়ে ও ব্যাক্তিগত ভাবে আমাকে ভাল লাগার কথা জানান আপনাদের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা রহিল।
কথা না বাড়িয়ে এই বার আজকের বিষয়টা নিয়ে এগিয়ে যায় বলে রাখি অদৃশ্য সিরিয়ালের সব লেখা বাস্তব জীবনে আপনার আমার আশে পাশে ঘটে যাওয়া নিজের চোখে দেখা শুনা থেকে গল্প আকারে সাজাতে চেষ্টা করি।
অদৃশ্য সভা সমাবেশে যাওয়া ব্যাক্তিগত খুব একটা পছন্দ করেনা নিহায়েত শুধু সময় কাটানোর জন্য মাঝে মধ্য উপস্থিত হয় কারণ এইখানকার সমাবেশ গুলোতে দীর্ঘ বক্তিতা অপ্রসাঙ্গিক কথা বার্তা খুব বিরক্তকর আজকে অদৃশ্য যে সভাটি উপস্থিত হয় তাহা ছিল ভিন্ন প্রাণবন্ত উপস্থাপকের দক্ষ পরিচালনায় অনুষ্টান আরো প্রাণবন্ত উপভোগ্য হয়ে উটে যদি রাজনৈতিক দলের সভা এমন সভা অদৃশ্য আগে যাহা দেখেনি।
সকল নেতা নেতৃবৃন্দের পর সভাপতি আসলেন বক্তিতা দেওয়ার জন্য  সুধী মন্ডলী উপস্থিত সমাবেত সবাই কে সালাম দিয়ে বক্তিতা শুরু করলেন আপনারা জানেন আমি সম্প্রতি হজ্ব ব্রত পালন করেছি আপনাদের সবার জন্য দেশের মঙ্গল কামনায় সারা বিশ্বে নির্যাতিত নিপীড়িত মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য দোয়া করেছি আল্লাহর কাছে  দু হাত তুলে কেঁদে কেঁদে বলেছি হে আল্লাহ আপনি আমাদের কবুল করুন কথা গুলো তিনি এমন করুণ করে বলছিলেন সবাই তার মুখের দিকে থাকিয়ে আছে এই যেন এক অমৃত সুধা এইবার তিনি প্রসঙ্গ বদলিয়ে রাজনৈতিক আলাপ চারিতা বা বক্তব্যের দিকে যেতে চাইলে সবাই থাকে থামিয়ে দিল সমস্বরে বলে উঠল প্রিয় নেতা আমরা আজকে আপনার মুখ থেকে অন্য কোন কিছু শুনতে চাইনা হজ্বব্রত করে আসলেন আপনার অনুভূতি আমাদের জন্য শিক্ষণীয় কিছু বলুন।
তিনি হেঁসে উঠলেন সবার অনুরোধ আহবানে। শুনুন
ধর্ম বিষয়ে আমার তেমন জ্ঞান নাই তবে একজন মুসলিম হিসাবে যতটুকু আমার ধর্ম নিয়ে জ্ঞান থাকা যানা দরকার আল্লাহতালা আমাকে ততটুকু শিক্ষা নেওয়া যানার তাওফিক দিয়েছেন এই জন্য মহান আল্লাহ নিকট শুকুরিয়া আদায় করি।
এর আগে আমি হজ্ব পালন করেছি বিশ বারে অধিক ওমরা করেছি এইবারের হজ্বটা আমার মৃত মায়ের বদলি হজ্ব সাথে আমার পরিবার শশুড় শাশুড়ি ও হজ্ব পালনের উদ্দেশ্য আমার সাথে ছিল সাথে আরো লোকজন ছিল একটা বড় কাফেলায় আমরা আছি আমাদের মোয়াল্লেম তিনি খুব ভাল মানুষ সবাইকে হজ্ব নিয়ুম কানুন এবাদতের বিষয় গুলো খুব ভাল ভাবে আমাদের কাফেলার হাজীদের বুঝান সময় পেলে তুমি আমাদের নিয়ে বসে বয়ান দেন তার কথা বার্তা শুনে লোকজন খুব আবেগ তাড়িত হয় আরো বেশি এবাদতে মশগুল হয়।
হাজীরা সারাক্ষণ কান্নাকাটি করে মহান আল্লাহ দরবারে গুনা মাপের জন্য সন্তান সন্তনি পরিবারের মঙ্গলের জন্য।
এবাদত শেষে আমি পুরুষ কাফেলার ফিরে গেয়ে হাজীদের আপ্যায়ন করি তাদের কোন সুযোগ সুবিধা সমস্যা শারীরিক অসুস্থাতাগ  কিনা খবর নিতে তাকি ঐ দিকে আমার স্ত্রী নারী কাফেলায় অনুরুপ ভাবে মহিলা হাজীয়াদের খবরা খবর  নিতে তাকে এইভাবে আমাদের হজ্বব্রত মানুষের সেবা দুইটি এগিয়ে চলে কাফেলায় হাজীদের সেবা যত্ন করতে আমার একটি বারের মত বিরক্ত লাগেনি তাহা  করতে পেরে মনে মনে নিজের কাছে খুব তৃপ্তিবোধ করতাম।
আপনারা জানেন হজ্বের প্রধান আনুষ্ঠানিকতা  আরাফাত দিবস খুব কঠিন কষ্টের মধ্যে হাজীদের পার করতে হয় দুপুরে খাবার গ্রহণের জন্য সবাই আমাদের নিদিষ্ট তাবুতে ফিরে আসি আমাদের খাবার আস্তে বিলম্ব হয় হাজীরা খুব অস্তির হয়েগেছে খাবারে জন্য এর মধ্যে নানাজন নানান কথা বার্থা শুরু করে দিয়েছে মোয়াল্লেম কে দোষারোপ করেতেছে তিনি ইচ্ছা করে এই সব করতেছে এক বেলা না খাওয়ালে অনেক গুলো টাকা বেচে যায় আরো কত কি যাহা এইখানে বলা সম্ভব না আমি অভাগ হলাম এহেন আচরে  এতদিন যে মোয়াল্লেমের বয়ান শুনে লোকজন কান্নাকাটি করত মূহুত্তে তারা খোলস পালটে গেল আমি বার বার তাদের শান্ত করার চেষ্টা করি।
ইতিমধ্যে আমাদের খাবার নিয়ে মোয়াল্লেম হাজির আমি সহ আরো কয়েকজন এগিয়ে গেলাম বড় বড় ডেগে খাবার নিয়ে আসল খুব গরম আরবি ষ্টালে তালে করে এক তালে চার পাঁচ জন হাজী সাহেব দের খাবার পরিবেশ করলাম পানি গ্লাস হাত নিয়ে গুরে দেখতেছি জিজ্ঞাস করতেছি  কিছু লাগবে কিনা  ঐ দিন আমার খুব কষ্ট হয়েছিল হাত একদম লাল হয়েগেল তবু আল্লাহ দরবারে শুকরিয়া আদায় করলাম অভুক্ত মানুষ গুলোকে খাবারে এইটুকু সহযোগিতা করতে পেরে।
এই দিকে লোকজন কানা গোশা শুরু করে দিল আমরা এই সব কেন করতেছি আমরা মানে মহিলা কাফেলায় আমার স্ত্রী কেন তাদের এত খাতির যত্ন করতেছি অনেক মনে করল আমরা মোয়াল্লেমের খাস লোক কিছু টাকা পয়সার জন্য হাজীদের সেবা যত্নে এগিয়ে আসলাম সেবা যত্নে সন্তুষ্টি হলে হইত কিছু নগদ অর্থ আমরা পেতে পারি অনেক আবার কৌতূহলী হয়ে আমাদের খবরা খবর নিতেছে এর মধ্যে অনেকে আমার পরিচয় জেনে গেছে আজকে কাফেলার শেষ দিন হজ্ব শেষ হয়েগেল এখন দেশে পেরে যাওয়ার পালা শেষ রাতে আমাদের কাফেলার সবার একত্রি হলাম আমি সবার উদ্দেশ্য করে বললাম আমি এতদিন আপনাদের সাথে ছিলাম চেষ্টা করেছি আপনাদের সেবা যত্ন নিতে কতটুকু পেরেছি জানিনা যদি কোন ভুল ত্রুটি হয়ে তাকে আল্লাহ ওয়াস্তে আমাকে ক্ষমা করে দিবেন আমি হাত উঁচু করে  জিজ্ঞাস করলাম ক্ষমা করে দিলেন তো।
আমি লক্ষ করলাম এক ভদ্রলোক উঠে দাঁড়াল যদি অনুমিত দিন একটা কথা জিজ্ঞাস করার আছে।
জি দয়া করে বলুন।
আমি হজ্বের প্রথম দিন থেকে লক্ষ করতেছি আপনার আচার আছর  চলাফেরার প্রতি আপনি আমাদের কে সেবা যত্ন করলেন আর আমরা আপনাকে চাকর ভেবেছি অথচ আপনার সমাজিক রাজনৈতিক অর্থনৈতিক পরিচয় বড় সম্মানের আপনি তো সমাজে প্রতিষ্টিত একজন মানুষ নিশ্চয় টাকার জন্য করেন না আমাদের বলুন আপনি এত কাতির যত্ন কেন করলেন।
দেখুন আল্লাহতালা কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার মত ভাষা আমার নাই তিনি আমাকে অনেক দিয়েছেন এইখানে আমি আপনি আল্লাহ্‌ সন্তুটির হজ্ব আদায় করতে এসেছি জানিনা আল্লাহ কতটুকু কবুল করেছে কাকে কবুল করেছে জানিনা তিনি মানুষ কে ভালবাসতে বলেছেন মানুষের কল্যাণে কাজ করতে বলেছেন এইটা আমার মায়ের বদলি হজ্ব ব্রত করতেছি আমার কাছে খুব ভয় হয়েছিল  যদি আল্লাহ কাছে এই হজ্ব কবুল না হয় আমার মা কে কেয়ামতের ময়দানে কি জবাব দেব আপনাদের কে আমি সেবা যত্ন করেছি এতে যদি কাহারো মনে এতটুকু লাগে হৃদয় খুশি হয় ভেবে ছিলাম কেয়ামত দিবসে এইটা আমার মায়ের জন্য নাজাতের উপায় হবে।
আমার কথা শুনে চতুর্দিকে নীরবতা নেমে এল সবায় আমার দিকে অভাগ হয়ে থাকিয়ে আছে।
অনেকে হা মা ও করে কেঁদে বল্ল কি একটি দারুণ সুযোগ হাতছাড়া করেছি আমরা কত অস্তির বিরক্ত হয়েছি হে আল্লাহ্‌ তুমি আমাদের ক্ষমা কর।

Comments

Popular posts from this blog

একটি মেয়ে দৌড়ে বাসে উঠে বৃষ্টিতে অর্ধেক ভিজে.............

চাটগাঁইয়া ভাষার কবিতা

চাটগাঁইয়া কবিতা....নোয়া পয়সা....