আমার জাতির পিতা
মুজিব ভাই, বঙ্গবন্ধু,আমার জাতির পিতা।
১৯২০ সালে ১৭ই মার্চ গোপাল গঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় বাবা শেখ লুৎফর রহমান, মা সায়েরার কোলে যে ছেলেটি জন্ম নিলো।নাম তার শেখ মুজিবুর রহমান, আদরে নাম খোকা। সেই ছেলেটি বাল্যকালে মানুষের দুঃখে দুঃখিত হতো,সুখে দুঃখে মানবতার সেবাই এগিয়ে আসতো অন্যায় দেখলে প্রতিবাদ করতো, আমার স্বাধীন দেশ হবে এমন স্বপ্নের বীজ হৃদয়ে বপন করেছে।স্কুল কলেজ পড়ুয়া খোকা হলেন সবার মুজিব ভাই,প্রিয় মুজিব ভাই। তখনও আমার জন্ম হয়নি আমি ঘুমিয়েছিলাম আমার পিতার অন্তরে।আমার পিতা তার পিতার অন্তরে।
১৯৪৭ সালে মুজিব ভাই আরো মহান নেতাদের সাথে মিলিয়ে একটি দেশ নিয়ে এলো,সেই দেশ গঠনে ওয়াদা ছিল, ভাত দিবে,শিক্ষা দিবে,চিকিৎসা দিবে,বস্ত্র দিবে,শাসনতন্ত্র দিবে,গণতন্ত্র দিবে।কিন্তু তারা কথা রাখেনি,প্রথম আঘাত টা করলেন আমার মুখের উপর, কোকিল কে বলে কাউকার ডাক দিতে। তারা আমার মুখের ভাষা কারাই নিতে চাই।তা কি হয়, বোকারা জানেনা এই জাতি ভাষার জন্য বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিবে,তখন মুজিব ভাই ভাবলেন তার ভিতর যে দেশ বোনার স্বপ্ন উঁকু দিতো সেই দেশ তিনি পাইনি।
সেই যাত্রারায় মুজিব ভাইয়েরা আমার ভাষা কে রক্ষা করলেন।যখন আমার মায়ের ভাষা প্রতিষ্ঠিত হলো তখন আমি আমার পিতার অন্তরে।
মুজিব ভাই শত চেষ্টা করে এই জাতি কে সুখ দিতে পারেনা তাদের মুখে ভাত তুলে দিতে পারেনা,চিকিৎসা দিতে পারেনা,শিক্ষা দিতে পারেনা, এই দুঃখি বাংলার মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে পারেনা,এই জাতি কি শুধু বঞ্চিত হবে ব্রিটিশরা দুশো বছর গোলাম করে রেখে লুটপাট করে নিয়ে গেছে ,এখন পাকিস্তানিরা আমাদের শোষণ করছে।ওহ না না এই জাতি কে আমার মুক্তি দিতে হবে।
ভাষা প্রতিষ্ঠিত করেছেন জন্মের পর স্বপ্নের যে দেশের মানচিত্র তিনি হৃদয়ে এঁকেছে তার চূড়ান্ত রূপ দিতে মুজিব ভাই এইবার ছয় দফা নিয়ে সারাদেশ ঘুরে বেড়ায় জেল যুলুম অন্যায় অত্যাচার পরিবার স্ত্রী সন্তান কে আদর স্নেহ থেকে বঞ্চিত করে নিজের জীবন উৎর্সগ করলো, একটি দেশ গঠন করতে। সেই দেশের নাম দিলেন বাংলাদেশ। ততদিনে এই বাংলার মানুষ মুজিব ভাই কে,বঙ্গবন্ধু করে নিলো তিনি হলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
শত ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে এই বাংলার দামাল ছেলেরা বঙ্গবন্ধু কে ২২ফেব্রুয়ারি ফাঁসির মঞ্চ থেকে চিনিয়ে আনলো।৭মার্চ লাখো জনতার সামনে এক অমর কাব্য রচনা করলো এইবারে সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম, এইবারে সংগ্রাম স্বাধীনতা সংগ্রাম,মরতে যখন শিখেছি কেউ আমাদের দাবিয়ে রাখতে পারবেনা।সেই দিন বাঙ্গালী জাতি তার মুক্তির পথ স্বাধীন দেশ গঠনের মূল মন্ত্র পেয়ে গেলো।২৫শে মার্চ কালো রাতে বর্বর পাক হানাদার বাহিনী ও তাদের দোষর রাজাকার,আল বদর,আল সামসরা নিরহ ঘুমন্ত জাতির উপর গুলি চালাতে লাগলো একের পর এক বাড়ি ঘরে আগুন,ধর্ষণ,হত্যা লুন্ঠন চালাতে থাকে সেই ভোর রাতে পাক হানাদার বাহিনী বঙ্গবন্ধু কে বন্দি করে পশ্চিম পাকিস্তানে কারাগারে নিয়ে যায়।তার আগে তিনি স্বাধীনতা ঘোষণা দিয়ে দিলেন স্বাধীনতা আগুন বাংলাদেশীর বুকে জ্বালিয়ে দিলেন।সেই ভিত্তির উপর দাঁড়িয়ে এই দেশের মুক্তিকামী জনতা একটি দেশ গঠনের জন্য স্বসস্ত্র মুক্তি বাহিনী গঠন করে।তারা বঙ্গবন্ধু কে সামনে রেখে তার দেখানো পথ ধরে এগিয়ে যায় মাত্র নয় মাস সংগ্রাম করে ত্রিশ লাখ শহিদ দুলাখ মা বোনের ইজ্জতরের বিনিময়ে১৬ডিসেম্বর দেশ স্বাধীন হয় বিজয় অর্জিত হয়।তখনও তিনি জেলে বন্দি জীবন্ত এক মানুষ তার খনন করা কবরের পাশে বসে মৃত্যুর দিন গুনে বাংলাদেশীর বিরহে যাতনায় হৃদয় দহন হয়।
দেশ স্বাধীন হলো কিন্তু যে জাতি তাকে মুজিব ভাই বানিয়েছে,বঙ্গবন্ধু বানিয়েছে তাদের কাছে স্বাধীনতার স্বাদ অপূর্ণ রয়ে গেলো অবশেষে ১০ই জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু ফিরে এলেন তার স্বপ্নের স্বাধীন বাংলায়।জনতার ঢ্ল নামলো তেজগাঁও থেকে রেসকোর্স ময়দান পর্যন্ত ফুলের পাপড়ি ছিটিয়ে জাতি বরণ করে নিলো স্বাধীনতার পূর্ণ স্বাদ এই জাতি পেলো।সেই দিন তারা ভালোবেসে বঙ্গবন্ধুকে জাতির পিতা,বাংলাদেশের জাতির পিতার আসনে বসালো। তখন থেকে তিনি আমার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।তখনও আমার জন্ম হয়নি আমি ছিলাম আমার পিতার অন্তরে।
শাসনতন্ত্র,সমাজতন্ত্র,ধর্ম নিরপেক্ষ, গণতন্ত্র,এই চারটি স্তম্ভে দাঁড়িয়ে,উর্বর মাটি আর সোনার মানুষ নিয়ে সোনার দেশ গড়ে এই দুঃখি মানুষ গুলো মুখে হাসি ফুটাবে।দূর্নীতিবাজ, চোরাকারবারি, লুটকারি,দেশি বিদেশে ষড়যন্ত্রের উপর আঘাত করতে লাগলেন তার তিন বছরের শাসনমালে উপলদ্ধি করেছেন দেশ স্বাধীন হলেও কিছু দুষ্ট চক্রের শিকড় এই মাটিতে রয়েগেছে এই গুলো যদি উৎখাত করতে না পারি তাহলে স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে।
কৃষি জমি পতিত রাখা যাবেনা, কল কারখানায় উৎপাদন বাড়াতে হবে, সর্বপুরি তিনি দেশ গঠনের জাতি কে নিয়ে ঝাপিয়ে পড়লেন সীমিত সম্পদ নিয়ে সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করে দেশ কে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।
১৫আগষ্ট এক কালো রাতে সপরিবারে শহিদ হলেন।আমার মুজিব ভাই,আমার বঙ্গবন্ধু,আমার জাতির পিতা।যে স্ত্রী দেশের মানুষের জন্য স্বামীর আদর সোহাগ ত্যাগ করলো,সেই দেশের মানুষ তাকে হত্যা করলো ছোট্ট রাসেল বাবা কে কাছে না পেয়ে হাসু আপার বাবাকে বাবা ডাকতে চেয়ে ছিলো তাকে নির্মম ভাবে হত্যা করা হলো। মুজিব ভাই,বঙ্গবন্ধু,জাতির পিতা,এই শব্দ গুলো আস্তে আস্তে সু পরিকল্পিত ভাবে মুছে দিতে লাগলো সোনার বাংলা গঠনের ফ্লাট ফর্ম থেকে এই দেশ ছিটকে খাদে পড়ে গেলো।তখনও আমার জন্ম হয়নি পৃথিবীতে আসতে আমার আট বছর বাকি।
আমি আমার পিতার অন্তর থেকে মায়ের কোলে এলাম বড়ো হচ্ছি এই দেশের আলো বাতাস গায়ে লাগিয়ে ঘুরে বেড়ায় স্বাধীন ভাবে চলছি ঘুরছি খাচ্ছি স্কুলে যায়।এই সবুজ সুফলা মাঠঘাট মাটির গন্ধ আমার অসম্ভব ভালো লাগে এর মাঝে,১৯৯৬সালে নির্বাচনে এলো,আমি এলাকার রাজনৈতিক জন সভায় কিছু নেতাদের মুখে বলতে শুনেছি যদি আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে এই দেশ হিন্দু রাষ্ট্র হয়ে যাবে, মসজিদে আযান হবেনা।ইন্ডিয়ার হাতে এই দেশ তুলে দিবে।তখনও এইসব কথা বুঝার মতো ক্ষমতা আমার হয়নি।তবে এক প্রবীণ লোককে বলতে শুনেছি শেখের বেঠি ক্ষমতায় আসলে ভালো হবে,তখনও আমি শেখের বেঠি কে জানতাম না।সেই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ক্ষমতা এলো,
চারিদিকে হৈ হৈ চৈ চৈ হাই হাই আওয়াজ উঠে এই দেশ ইন্ডিয়া হয়ে যাবে,মসজিদে আযান হবেনা।দেশ বিক্রি হয়ে যাবে।
শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হলেন তার সরকারে সূচনাতে আমাদের এলাকার ধান চালের ব্যবসায়ীদের মাথায় হাত দিলেন, তারা বেঝায় অখুশি আবার ভিন্ন চিত্র সাধারণ মানুষের মধ্য সস্তায় চাল ডাল নিত্য পণ্য ক্রয় করছে, কৃষকের সার বীজ কীটনাশক দাম নাগালের মধ্য।তবে এইসবে আমার কিছু যায় আসেনা এইসব হিসাব বুঝার মতো বয়স আমার হয়নি,একদিন সকালে মাইকে আওয়াজ শুনতে পেলাম ধরাজ কন্ঠে ভাইয়েরা রক্ত যখন দিয়েছি রক্ত আরো দেবো এদেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়বো ইনশল্লাহ এইবারে সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম এইবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম জয় বাংলা এই প্রথম জয় বাংলা শব্দটি আমার গা শিহরে উঠলো,এই ভাষনের প্রতিটা শব্দ আমার হৃদয়ে ছুঁয়ে যাচ্ছে শুনতে শুনতে বাজারে ফরিদ কোম্পানির দোকানে মাইক পর্যন্ত পৌছে গেছি। আমার মনে হলো এতো দিন এই ভাষন আকাশে বাতাসে ভেসে বেড়াতো আমি শুনতে পেতাম আমার খুব পরিচিত ছিল, তা আজ ধরা দিলো, দিনটি ৭মার্চ।
আওয়ামী লীগ সরকারের ২/৩ বছর,অতিবাহিত হলো বাংলাদেশ বিক্রি হয়নি,মসজিদে আযান বন্ধ হয়নি।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু স্বপরিবারে হত্যা বিচার সামনে এলো এইটা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনা হচ্ছে। এতো বছর পর এইসবের কি দরকার এই ধরনের কথাবার্তা শুনতে পাচ্ছি বিচার হলো পত্রিকার পাতায় দেখলাম খুনিদের সাজা হয়েছে।তবে অনেক খুনি পলাতক,পত্রিকার পাতায় খুনি আর তাদের আশ্রয় দাতাদের নিয়ে কুখ্যাতি সমালোচনা হচ্ছে।অনেকে তখন বলেছিলো এই বিচার শেষ হবেনা, যখন বিচার শেষ হলো তখন বললো রায় কার্যকর হবেনা, তবে আশাকার কথা খুনিকে ফাঁসির দড়িতে ঝুলতে হয়েছে বাকিদের ঝুলানোর জন্য খুঁজা হচ্ছে।
আমি যখন স্কুলে পড়ি মাওলানা ভাসানী, বীর শ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান,কে পেয়েছি কোথায়ও শেখ মুজিবুর রহমান কে পাইনি।তখন কিছু মানুষ বলতো বঙ্গবল্টু,জাতির পিতা আদম (আঃ) শেখ মুজিব কিসের জাতির পিতা।তিনি যুদ্ধের সময় পাকিস্তানে পালিয়ে গেছে, এই দেশ ইন্ডিয়ার অংশ করতে চেয়েছেন,শেখ মুজিবুর রহমান ইসলামের দোষমন, নাস্তিক আরো ছোট লোকের অপবাদ।
অথচ শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশে পা দেওয়ার আগে নিশ্চিত করেছেন ইন্ডিয়ান সেনা বাহিনী এই দেশ ছাড়ার দিনক্ষণ,ইসলামের খেদমতে ইসলামি ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা,বিশ্ব ইজতেমার জায়গায় নির্ধারণ করে দিয়েছেন।দুর্নীতিবাজ চোরাকারবারিদের বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষণা করেছেন।সর্বপুরি সোনার বাংলা গড়তে নিজেকে আত্ন নিয়োজিত করলেন। তার ভাষন শুনলে অসাপ্ত আত্ন জীবনি পড়লে শেখ মুজিব কেন বঙ্গবন্ধু,কেন জাতির পিতা তার উত্তর সহযে পাওয়া যাবে।অমায়িক,নির্হকার, সাহসী,দৃঢ়চেতা,আপোষহীন এই বাংলার মাটিতে দ্বিতীয় জন খুঁজে পাওয়া যাবেনা।
সত্য সমাগত মিথ্য বিতাড়িত সত্যের জয় মিথ্যার ক্ষয়।ইতিহাস কেউ রচনা করতে পারেনা ইতিহাস আপন গতিতে রচিত হয়।আবার ইতিহাস কে চাইলে মুছে দিতে পারেনা।আজকে স্কুল কলেজে বই পত্রে আমার মুজিব ভাই,আমার বঙ্গবন্ধু,আমার জাতির পিতাকে খুঁজে পাওয়া যায় আজকের প্রজন্ম সত্য ইতিহাস জানতে পারছে তারা শেখ মুজিবরবে স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে বদ্ধ পরিকর।১৫আগষ্টের পর যারা হঠাৎ করে ২৬মার্চ এসেছে বাঙ্গালী নয় মাস যুদ্ধ করে এই দেশ স্বাধীন করার গল্প বলতেন তারা মিথ্যুক প্রমাণিত হয়েছে,যারা শেখ মুজিব মুছে পেলতে চেয়েছে আজকে তারা হারিয়ে যাচ্ছে।
হৃদয় থেকে হৃদয়ে জাতি লিখছে যে গান
সেই আমার পিতা শেখ মজিবুর রহমান।
যে নাম টি মুছে দিতে হাত তোরা দিলে
সেই নাম আজ দেখে যা শত বছরে উজ্জ্বলে।
আমি আমার মুজিব ভাই বঙ্গবন্ধু জাতির পিতাকে খুঁজে পেয়েছি তিনি আমার আমাদের বাংলাদেশের আর পৃথিবীর মুক্তিকামী মানুষের তিনি কোন একক দলের গোষ্ঠীর পরিবারের নয় তিনি সোনার বাংলার বটবৃক্ষ এই দেশ কে সোনার বাংলা করতে হলে তার কাছে যেতে হবে।
জিয়াউল হক
প্রবাসী কামলা
একজন মুজিব প্রেমিক।
১৯২০ সালে ১৭ই মার্চ গোপাল গঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় বাবা শেখ লুৎফর রহমান, মা সায়েরার কোলে যে ছেলেটি জন্ম নিলো।নাম তার শেখ মুজিবুর রহমান, আদরে নাম খোকা। সেই ছেলেটি বাল্যকালে মানুষের দুঃখে দুঃখিত হতো,সুখে দুঃখে মানবতার সেবাই এগিয়ে আসতো অন্যায় দেখলে প্রতিবাদ করতো, আমার স্বাধীন দেশ হবে এমন স্বপ্নের বীজ হৃদয়ে বপন করেছে।স্কুল কলেজ পড়ুয়া খোকা হলেন সবার মুজিব ভাই,প্রিয় মুজিব ভাই। তখনও আমার জন্ম হয়নি আমি ঘুমিয়েছিলাম আমার পিতার অন্তরে।আমার পিতা তার পিতার অন্তরে।
১৯৪৭ সালে মুজিব ভাই আরো মহান নেতাদের সাথে মিলিয়ে একটি দেশ নিয়ে এলো,সেই দেশ গঠনে ওয়াদা ছিল, ভাত দিবে,শিক্ষা দিবে,চিকিৎসা দিবে,বস্ত্র দিবে,শাসনতন্ত্র দিবে,গণতন্ত্র দিবে।কিন্তু তারা কথা রাখেনি,প্রথম আঘাত টা করলেন আমার মুখের উপর, কোকিল কে বলে কাউকার ডাক দিতে। তারা আমার মুখের ভাষা কারাই নিতে চাই।তা কি হয়, বোকারা জানেনা এই জাতি ভাষার জন্য বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিবে,তখন মুজিব ভাই ভাবলেন তার ভিতর যে দেশ বোনার স্বপ্ন উঁকু দিতো সেই দেশ তিনি পাইনি।
সেই যাত্রারায় মুজিব ভাইয়েরা আমার ভাষা কে রক্ষা করলেন।যখন আমার মায়ের ভাষা প্রতিষ্ঠিত হলো তখন আমি আমার পিতার অন্তরে।
মুজিব ভাই শত চেষ্টা করে এই জাতি কে সুখ দিতে পারেনা তাদের মুখে ভাত তুলে দিতে পারেনা,চিকিৎসা দিতে পারেনা,শিক্ষা দিতে পারেনা, এই দুঃখি বাংলার মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে পারেনা,এই জাতি কি শুধু বঞ্চিত হবে ব্রিটিশরা দুশো বছর গোলাম করে রেখে লুটপাট করে নিয়ে গেছে ,এখন পাকিস্তানিরা আমাদের শোষণ করছে।ওহ না না এই জাতি কে আমার মুক্তি দিতে হবে।
ভাষা প্রতিষ্ঠিত করেছেন জন্মের পর স্বপ্নের যে দেশের মানচিত্র তিনি হৃদয়ে এঁকেছে তার চূড়ান্ত রূপ দিতে মুজিব ভাই এইবার ছয় দফা নিয়ে সারাদেশ ঘুরে বেড়ায় জেল যুলুম অন্যায় অত্যাচার পরিবার স্ত্রী সন্তান কে আদর স্নেহ থেকে বঞ্চিত করে নিজের জীবন উৎর্সগ করলো, একটি দেশ গঠন করতে। সেই দেশের নাম দিলেন বাংলাদেশ। ততদিনে এই বাংলার মানুষ মুজিব ভাই কে,বঙ্গবন্ধু করে নিলো তিনি হলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
শত ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে এই বাংলার দামাল ছেলেরা বঙ্গবন্ধু কে ২২ফেব্রুয়ারি ফাঁসির মঞ্চ থেকে চিনিয়ে আনলো।৭মার্চ লাখো জনতার সামনে এক অমর কাব্য রচনা করলো এইবারে সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম, এইবারে সংগ্রাম স্বাধীনতা সংগ্রাম,মরতে যখন শিখেছি কেউ আমাদের দাবিয়ে রাখতে পারবেনা।সেই দিন বাঙ্গালী জাতি তার মুক্তির পথ স্বাধীন দেশ গঠনের মূল মন্ত্র পেয়ে গেলো।২৫শে মার্চ কালো রাতে বর্বর পাক হানাদার বাহিনী ও তাদের দোষর রাজাকার,আল বদর,আল সামসরা নিরহ ঘুমন্ত জাতির উপর গুলি চালাতে লাগলো একের পর এক বাড়ি ঘরে আগুন,ধর্ষণ,হত্যা লুন্ঠন চালাতে থাকে সেই ভোর রাতে পাক হানাদার বাহিনী বঙ্গবন্ধু কে বন্দি করে পশ্চিম পাকিস্তানে কারাগারে নিয়ে যায়।তার আগে তিনি স্বাধীনতা ঘোষণা দিয়ে দিলেন স্বাধীনতা আগুন বাংলাদেশীর বুকে জ্বালিয়ে দিলেন।সেই ভিত্তির উপর দাঁড়িয়ে এই দেশের মুক্তিকামী জনতা একটি দেশ গঠনের জন্য স্বসস্ত্র মুক্তি বাহিনী গঠন করে।তারা বঙ্গবন্ধু কে সামনে রেখে তার দেখানো পথ ধরে এগিয়ে যায় মাত্র নয় মাস সংগ্রাম করে ত্রিশ লাখ শহিদ দুলাখ মা বোনের ইজ্জতরের বিনিময়ে১৬ডিসেম্বর দেশ স্বাধীন হয় বিজয় অর্জিত হয়।তখনও তিনি জেলে বন্দি জীবন্ত এক মানুষ তার খনন করা কবরের পাশে বসে মৃত্যুর দিন গুনে বাংলাদেশীর বিরহে যাতনায় হৃদয় দহন হয়।
দেশ স্বাধীন হলো কিন্তু যে জাতি তাকে মুজিব ভাই বানিয়েছে,বঙ্গবন্ধু বানিয়েছে তাদের কাছে স্বাধীনতার স্বাদ অপূর্ণ রয়ে গেলো অবশেষে ১০ই জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু ফিরে এলেন তার স্বপ্নের স্বাধীন বাংলায়।জনতার ঢ্ল নামলো তেজগাঁও থেকে রেসকোর্স ময়দান পর্যন্ত ফুলের পাপড়ি ছিটিয়ে জাতি বরণ করে নিলো স্বাধীনতার পূর্ণ স্বাদ এই জাতি পেলো।সেই দিন তারা ভালোবেসে বঙ্গবন্ধুকে জাতির পিতা,বাংলাদেশের জাতির পিতার আসনে বসালো। তখন থেকে তিনি আমার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।তখনও আমার জন্ম হয়নি আমি ছিলাম আমার পিতার অন্তরে।
শাসনতন্ত্র,সমাজতন্ত্র,ধর্ম নিরপেক্ষ, গণতন্ত্র,এই চারটি স্তম্ভে দাঁড়িয়ে,উর্বর মাটি আর সোনার মানুষ নিয়ে সোনার দেশ গড়ে এই দুঃখি মানুষ গুলো মুখে হাসি ফুটাবে।দূর্নীতিবাজ, চোরাকারবারি, লুটকারি,দেশি বিদেশে ষড়যন্ত্রের উপর আঘাত করতে লাগলেন তার তিন বছরের শাসনমালে উপলদ্ধি করেছেন দেশ স্বাধীন হলেও কিছু দুষ্ট চক্রের শিকড় এই মাটিতে রয়েগেছে এই গুলো যদি উৎখাত করতে না পারি তাহলে স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে।
কৃষি জমি পতিত রাখা যাবেনা, কল কারখানায় উৎপাদন বাড়াতে হবে, সর্বপুরি তিনি দেশ গঠনের জাতি কে নিয়ে ঝাপিয়ে পড়লেন সীমিত সম্পদ নিয়ে সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করে দেশ কে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।
১৫আগষ্ট এক কালো রাতে সপরিবারে শহিদ হলেন।আমার মুজিব ভাই,আমার বঙ্গবন্ধু,আমার জাতির পিতা।যে স্ত্রী দেশের মানুষের জন্য স্বামীর আদর সোহাগ ত্যাগ করলো,সেই দেশের মানুষ তাকে হত্যা করলো ছোট্ট রাসেল বাবা কে কাছে না পেয়ে হাসু আপার বাবাকে বাবা ডাকতে চেয়ে ছিলো তাকে নির্মম ভাবে হত্যা করা হলো। মুজিব ভাই,বঙ্গবন্ধু,জাতির পিতা,এই শব্দ গুলো আস্তে আস্তে সু পরিকল্পিত ভাবে মুছে দিতে লাগলো সোনার বাংলা গঠনের ফ্লাট ফর্ম থেকে এই দেশ ছিটকে খাদে পড়ে গেলো।তখনও আমার জন্ম হয়নি পৃথিবীতে আসতে আমার আট বছর বাকি।
আমি আমার পিতার অন্তর থেকে মায়ের কোলে এলাম বড়ো হচ্ছি এই দেশের আলো বাতাস গায়ে লাগিয়ে ঘুরে বেড়ায় স্বাধীন ভাবে চলছি ঘুরছি খাচ্ছি স্কুলে যায়।এই সবুজ সুফলা মাঠঘাট মাটির গন্ধ আমার অসম্ভব ভালো লাগে এর মাঝে,১৯৯৬সালে নির্বাচনে এলো,আমি এলাকার রাজনৈতিক জন সভায় কিছু নেতাদের মুখে বলতে শুনেছি যদি আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে এই দেশ হিন্দু রাষ্ট্র হয়ে যাবে, মসজিদে আযান হবেনা।ইন্ডিয়ার হাতে এই দেশ তুলে দিবে।তখনও এইসব কথা বুঝার মতো ক্ষমতা আমার হয়নি।তবে এক প্রবীণ লোককে বলতে শুনেছি শেখের বেঠি ক্ষমতায় আসলে ভালো হবে,তখনও আমি শেখের বেঠি কে জানতাম না।সেই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ক্ষমতা এলো,
চারিদিকে হৈ হৈ চৈ চৈ হাই হাই আওয়াজ উঠে এই দেশ ইন্ডিয়া হয়ে যাবে,মসজিদে আযান হবেনা।দেশ বিক্রি হয়ে যাবে।
শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হলেন তার সরকারে সূচনাতে আমাদের এলাকার ধান চালের ব্যবসায়ীদের মাথায় হাত দিলেন, তারা বেঝায় অখুশি আবার ভিন্ন চিত্র সাধারণ মানুষের মধ্য সস্তায় চাল ডাল নিত্য পণ্য ক্রয় করছে, কৃষকের সার বীজ কীটনাশক দাম নাগালের মধ্য।তবে এইসবে আমার কিছু যায় আসেনা এইসব হিসাব বুঝার মতো বয়স আমার হয়নি,একদিন সকালে মাইকে আওয়াজ শুনতে পেলাম ধরাজ কন্ঠে ভাইয়েরা রক্ত যখন দিয়েছি রক্ত আরো দেবো এদেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়বো ইনশল্লাহ এইবারে সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম এইবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম জয় বাংলা এই প্রথম জয় বাংলা শব্দটি আমার গা শিহরে উঠলো,এই ভাষনের প্রতিটা শব্দ আমার হৃদয়ে ছুঁয়ে যাচ্ছে শুনতে শুনতে বাজারে ফরিদ কোম্পানির দোকানে মাইক পর্যন্ত পৌছে গেছি। আমার মনে হলো এতো দিন এই ভাষন আকাশে বাতাসে ভেসে বেড়াতো আমি শুনতে পেতাম আমার খুব পরিচিত ছিল, তা আজ ধরা দিলো, দিনটি ৭মার্চ।
আওয়ামী লীগ সরকারের ২/৩ বছর,অতিবাহিত হলো বাংলাদেশ বিক্রি হয়নি,মসজিদে আযান বন্ধ হয়নি।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু স্বপরিবারে হত্যা বিচার সামনে এলো এইটা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনা হচ্ছে। এতো বছর পর এইসবের কি দরকার এই ধরনের কথাবার্তা শুনতে পাচ্ছি বিচার হলো পত্রিকার পাতায় দেখলাম খুনিদের সাজা হয়েছে।তবে অনেক খুনি পলাতক,পত্রিকার পাতায় খুনি আর তাদের আশ্রয় দাতাদের নিয়ে কুখ্যাতি সমালোচনা হচ্ছে।অনেকে তখন বলেছিলো এই বিচার শেষ হবেনা, যখন বিচার শেষ হলো তখন বললো রায় কার্যকর হবেনা, তবে আশাকার কথা খুনিকে ফাঁসির দড়িতে ঝুলতে হয়েছে বাকিদের ঝুলানোর জন্য খুঁজা হচ্ছে।
আমি যখন স্কুলে পড়ি মাওলানা ভাসানী, বীর শ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান,কে পেয়েছি কোথায়ও শেখ মুজিবুর রহমান কে পাইনি।তখন কিছু মানুষ বলতো বঙ্গবল্টু,জাতির পিতা আদম (আঃ) শেখ মুজিব কিসের জাতির পিতা।তিনি যুদ্ধের সময় পাকিস্তানে পালিয়ে গেছে, এই দেশ ইন্ডিয়ার অংশ করতে চেয়েছেন,শেখ মুজিবুর রহমান ইসলামের দোষমন, নাস্তিক আরো ছোট লোকের অপবাদ।
অথচ শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশে পা দেওয়ার আগে নিশ্চিত করেছেন ইন্ডিয়ান সেনা বাহিনী এই দেশ ছাড়ার দিনক্ষণ,ইসলামের খেদমতে ইসলামি ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা,বিশ্ব ইজতেমার জায়গায় নির্ধারণ করে দিয়েছেন।দুর্নীতিবাজ চোরাকারবারিদের বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষণা করেছেন।সর্বপুরি সোনার বাংলা গড়তে নিজেকে আত্ন নিয়োজিত করলেন। তার ভাষন শুনলে অসাপ্ত আত্ন জীবনি পড়লে শেখ মুজিব কেন বঙ্গবন্ধু,কেন জাতির পিতা তার উত্তর সহযে পাওয়া যাবে।অমায়িক,নির্হকার, সাহসী,দৃঢ়চেতা,আপোষহীন এই বাংলার মাটিতে দ্বিতীয় জন খুঁজে পাওয়া যাবেনা।
সত্য সমাগত মিথ্য বিতাড়িত সত্যের জয় মিথ্যার ক্ষয়।ইতিহাস কেউ রচনা করতে পারেনা ইতিহাস আপন গতিতে রচিত হয়।আবার ইতিহাস কে চাইলে মুছে দিতে পারেনা।আজকে স্কুল কলেজে বই পত্রে আমার মুজিব ভাই,আমার বঙ্গবন্ধু,আমার জাতির পিতাকে খুঁজে পাওয়া যায় আজকের প্রজন্ম সত্য ইতিহাস জানতে পারছে তারা শেখ মুজিবরবে স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে বদ্ধ পরিকর।১৫আগষ্টের পর যারা হঠাৎ করে ২৬মার্চ এসেছে বাঙ্গালী নয় মাস যুদ্ধ করে এই দেশ স্বাধীন করার গল্প বলতেন তারা মিথ্যুক প্রমাণিত হয়েছে,যারা শেখ মুজিব মুছে পেলতে চেয়েছে আজকে তারা হারিয়ে যাচ্ছে।
হৃদয় থেকে হৃদয়ে জাতি লিখছে যে গান
সেই আমার পিতা শেখ মজিবুর রহমান।
যে নাম টি মুছে দিতে হাত তোরা দিলে
সেই নাম আজ দেখে যা শত বছরে উজ্জ্বলে।
আমি আমার মুজিব ভাই বঙ্গবন্ধু জাতির পিতাকে খুঁজে পেয়েছি তিনি আমার আমাদের বাংলাদেশের আর পৃথিবীর মুক্তিকামী মানুষের তিনি কোন একক দলের গোষ্ঠীর পরিবারের নয় তিনি সোনার বাংলার বটবৃক্ষ এই দেশ কে সোনার বাংলা করতে হলে তার কাছে যেতে হবে।
জিয়াউল হক
প্রবাসী কামলা
একজন মুজিব প্রেমিক।
Comments
Post a Comment