কবিতা গুচ্ছ
সিরিয়াল ৩৯
"টাকলার বিয়ে"
জিয়াউল হক
দেশ বিদেশে ঘুরতে ঘুরতে চুল গেলো তাহার।
হঠাৎ মনে হলো বিয়ের বয়স হলো পার।
বন্ধু বান্ধব পাড়া প্রতিবেশি ডেকে বলেন তিনি।
আমার কি বিয়ে করার বয়স হয়নি এখনি।
হ্যাঁ হ্যাঁ বলে সবাই তারা দিলে সম্মতি
কন্যার পিতার দ্বারে ঘুরে চাই দেখার অনুমতি।
বন্ধু বান্ধব প্রতিবেশি করে কন্যা দেখার ব্যবস্থা
সাঁজগোঁজ করে ধরে কন্যার বাড়ির রাস্তা।
বাহ,বাহ বেশ বেশ কনে তাহার পছন্দ
কনের জবাব,টাকলার সাথে বিয়ে বন্ধ।
টাকলা নাছুড় বান্দা পন করেছে করবে বিয়ে
ব্যান্ড পার্টি আর শানাইয়ের সুর বাজিয়ে।
সারা গাও গ্রাম ঘুরে পেল এক ঘটকের দেখা
ঘটক বলে বুদ্ধি খেলাও এতদিন লাগে বোকা।
বলো বলো কি বুদ্ধি কান পেতে দিলো তাহাতে
কাঞ্চন হাটে যাও পরচুল লাগাইও মাথাতে।
বাহ,বাহ,বেশ বুদ্ধিখান মনে ধরল তাহার
সেঁজেগোঁজে পৌছে সেই গেল কনের দ্বার।
বর কনে দুজন হয়ে গেল এইবার রাজি
কবুল,কবুল,সম্মতিতে বিয়ে পড়ায় কাজী।
টাকলা বাসর ঘরে জামা খুলে পরচুল তুলে
এই কি?কি? কান্ড, ভন্ড,নববধু রেগে বলে।
তোমার সাথে করব না তো আমি সংসার
প্রতারণা অভিনয়ের ছিলতো না দরকার।
টাকলা কপাল চাপড়াই কপালে দিলো হাত
আমার কি মিটবেনা বিয়ের করার স্বাদ।
কবিতা একশত পাঁচ
১৩ই ফেব্রুয়ারি ২০১৮
সিরিয়াল ৩৮
"আজকাল"
রাজনীতি আর ধর্মেতে ভাগ
হয়ে দলে দলে।
দিনে দিনে দেশটা যাচ্ছে
দেখো রসাতলে।।
আপন ধর্মের মাঝে আবার
নানান দল মত।
মানুষ বিভ্রান্ত হচ্ছে খুঁজে
পেতে সঠিক পথ।।
ধর্মের নামে রাজনীতির নামে
চললে নোংরা খেলা।
সে-ই খেলায় পিষ্ট হচ্ছে
সাধারণ মানুষ মেলা।।
কি লাভ হচ্ছে দেশে এতো
করে ওয়াজ নছিয়ত।
ভোরে মুয়াজ্জিনের আযানে
হয়না মসজিদে জমায়ত।।
এখন ওয়াজ নছিয়তে বলেনা
নামাজ রোযার কথা।
ইচ্ছে মতো প্রতিপক্ষ কে
গালি দেয় বক্তা।।
রাজনৈতিক নেতা কল্যাণের
নামে করে গলাবাজ।
আসল চরিত্র তাহার হলো
একজন ধান্দা বাজ।।
ফেইজবুক ওয়ালেতে বাড়ছে
অনেক ধর্ম প্রচারক।
আসলে নয় তো তারা
প্রকৃত ধর্মের বাহক।।
জিয়াউল হক
সিরিয়াল ৩৭
"পাবলিক বাস"
জিয়াউল হক
জং ধরা রং করা থর থর করে চলছে
এখন ও রাস্তায় তাহার চাকা ঘুরছে।
পাবলিক বাস - পাবলিক বাস
পাছাতে মারে তারা হাত সর্বনাশ।
মধ্যবিত্ত গরীবের এই পরিবহণ
মাথায় ঝুলানো নষ্ট ফ্যান গরমে দহন।
নড়বড়ে সিট গ্লাস তাহার ভাঙ্গা
হেলপারের সাথে বাড়তি ভাড়ার দাঙ্গা।
আসেন ভাই আসেন ভাই, টেনে তুলেন
যান যান পিছনে একটু চেপে বসেন।
বসে আর দাঁড়িয়ে বাসখানা পরিপূর্ণ
ড্রাইভার মশাই চোখে দেখেন শূন্য।
যাত্রী সকলে যখন উঠাই চিল্লায়
ড্রাইভার মশাই তখন আস্তে যায়।
ঝন ঝন থর থর করে এইবার চলছে
হেলে ধুলে বাস কানা খন্দেকে পড়ছে।
ঘাম আর গন্ধ নিঃশ্বাস হয়ে যায় বন্ধ
তার মাঝে ভিক্ষুক দান করো আমি অন্ধ।
খবরের কাগজ গামছা কার কার দরকার
নেন ভাই নেন মিষ্টি সুস্বাদু ঘরের আচার।
পাবলিক বাসে চলি আমি ভাই মধ্যবিত্ত
এতসব অভিজ্ঞতা হচ্ছে আমার নিত্য।
কবিতা একশত চল্লিশ
১১জুলাই ২০১৮
সিরিয়াল ৩৬
প্রকৃতির বার্তা
জিয়াউল হক
মন কি করে বলো আমার ভালো থাকে
যাহা দেখেনি ভাবিনি কখনও আগে।
আমার প্রিয় গ্রাম কাঞ্চন নগর
আজকে দেখি পানি বন্ধী সব ঘর।
আমি বুক ফুলিয়ে মুখ উঁচু করে বলতাম
বর্ষার দিনে পানি জমে না জানতাম।
বর্ষার দিনে টিনের চালের ঝুমঝুম বৃষ্টি
মনের রাজ্যে কতো মধুর গল্প হতো সৃষ্টি।
এই তো পরিচিত,আমার গ্রামের বর্ষা
শত ঝড় তুফানে হারায় না ভরসা।
আজকাল শান্ত ধুরুং ও বড্ড অশান্ত হলে
মহিষের গুন সিঙার দ্বীপের বুক ছিঁড়ে পানি চলে।
খাল বিল নালায় পানি জমে ঘরে উঠে
কাঞ্চন নগরের মানুষ আগে দেখেনি মোটে।
ধুংখালের এমন ভয়ংকর রূপ দেখে
মনের ভিতর আজ অজানা ভয় জাগে।
এমন দিন মোকাবিলা করেনি আমরা
পানি বন্ধি মানুষ গুলো আজ দিশাহারা।
কাঞ্চন নগরের বন্যা নতুন অভিজ্ঞতা
প্রকৃতি দিচ্ছে এই কোন নতুন বার্তা।
১২ই জুন ২০১৮
সিরিয়াল ৩৫
জিয়াউল হক।
কছম করছি শুক্রবারে
মাংস খাবো আমরা।
ক্ষতি কি বাড়লে
বাড়ুক পেটের চামড়া।।
সবজি খেলে ভালো থাকে
আপনার দেহ স্বাস্থ্য।
জানে সবাই এই কথা
তারপর চাই গরু আস্ত।।
জুমার শেষে মাংস দিয়ে
মজা করে ভাত খায়
তারপরে তে কম্বল মুড়িয়ে
নাক ডেকে ঘুমায়।।
মাংস খেলে নানান ক্ষতি
বলি যখন এই কথা।
বলে তারা মাংস না খেলে
শুক্রবার টা যে বৃথা।।
সিরিয়াল ৩৪
"ধুরুং খাল"
ধুরুং খালে পানি এলো
খবর এলো কানে।
বাঁশের লাকড়ি ধরে নাকি
লোকজন কূলে টানে।।
এমন খবর পেয়ে আমি
গেলাম ধুরুং খালে।
সত্যি দেখি লাকড়ি তুলে
সবাই সমান তালে।।
হাঁটু পানি নেমে গেয়ে
হাতে টেটা বাঁশ।
মনের সুখে লাকড়ি ধরে
ভরছি চারি পাশ।।
জিয়াউল হক
৯ই জুলাই ২০১৯
সিরিয়াল ৩৩
"টাকলার বিয়ে"
জিয়াউল হক
দেশ বিদেশে ঘুরতে ঘুরতে চুল গেলো তাহার।
হঠাৎ মনে হলো বিয়ের বয়স হলো পার।
বন্ধু বান্ধব পাড়া প্রতিবেশি ডেকে বলেন তিনি।
আমার কি বিয়ে করার বয়স হয়নি এখনি।
হ্যাঁ হ্যাঁ বলে তারে সবাই দিলে সম্মতি
কন্যার পিতার দ্বারে ঘুরে চাই দেখার অনুমতি।
বন্ধু বান্ধব প্রতিবেশি করে কন্যা দেখার ব্যবস্থা
সাঁজগোঁজ করে ধরে কন্যার বাড়ির রাস্তা।
বাহ,বাহ বেশ বেশ কনে তাহার পছন্দ
কনের জবাব,টাকলার সাথে বিয়ে বন্ধ।
টাকলা নাছুড় বান্দা পন করেছে করবে বিয়ে
ব্যান্ড পার্টি আর শানাইয়ের সুর বাজিয়ে।
সারা গাও গ্রাম ঘুরে পেল এক ঘটকের দেখা
ঘটক বলে বুদ্ধি খেলাও এতদিন লাগে বোকা।
বলো বলো কি বুদ্ধি কান পেতে দিলো তাহাতে
কাঞ্চন হাটে যাও পরচুল লাগাইও মাথাতে।
বাহ,বাহ,বেশ বুদ্ধিখান মনে ধরল তাহার
সেঁজেগোঁজে পৌছে সেই গেল কনের দ্বার।
বর কনে দুজন হয়ে গেল এইবার রাজি
কবুল,কবুল,বলে তারা সম্মতি দিলো কাজী।
বাসর ঘরে জামা খুলে পরচুল তুলে
এই কি কান্ড ভন্ড,নববধু রেগে বলে।
তোমার সাথে করব না তো আমি সংসার
প্রতারণা অভিনয়ের কি ছিল না দরকার।
সিরিয়াল নং ৩২
"হারানো দিন"
জিয়াউল হক
দিনে দিনে হারিয়ে যায় কতো সময়
মনের কোনে উঁকি দেয় স্মৃতি মধুময়।
খুব মনে পড়ে আড্ডার দিন গুলো
এক চায়ে দুটি ঠোঁটের চুমুক গুলো।
তেমুহনী বাজারে পরিমলের দোকানে
পত্রিকার পাতায় মজিতাম বিনোদনে।
কাড়াকাড়ি সবার চাই বিনোদন পাতা
অবশেষে পড়ছি উঁকি দিয়ে লাগিয়ে মাথা।
বিকাল বেলায় ব্যাট বল নিয়ে ছুটে মাঠে
সন্ধ্যায় আড্ডায় মাতাতাম পুকুর ঘাটে।
কার ঘরে বিয়াইনের আগমন ক্ষেতের ফল
হাঁড়িনাড়ির খবর যার যতো আছে সব বল।
মনে আজো ভাসে আরো কত কি স্মৃতি
কোন দিন প্রকাশ না করার আছে মিনতি।
বহু পথ হেঁটে হারানো দিন গুলো মনে পড়ে
সেই বন্ধু সেই মুখ গুলো কথা খুব মনে পড়ে।।
১৪ই জানুয়ারি ২০১৮
সিরিয়াল ৩১
"কুমড়া ফুল বিক্রেতা"
জিয়াউল হক
কুমড়া ফুল বিক্রি করত
আমার গায়ের বালক।
সারা গায়ে জুড়ে ছিল
তাহার কালো তিলক।।
মৌমাছি জাগার আগে রোজ
ভোরে সে-ই জাগে।
ফুল ছিঁড়ে আনে মৌ মধু
খাওয়ার আগে।।
সারা শীত জুড়ে ভোরে
তাহার এই কাজ।
কুমড়া ফুল সাজিয়ে কাদে
নিতো লম্বা বাঁশ।।
হলুদের মাঝ কালো তিলের
মুখ,কালো কেশ
হলুদ আর কালো মিশ্রণে
তারে লাগত বেশ।।
কুমড়া ফুল বান্ডেল সাজানো
ছিল তাহার সেরা।
বাজারে তুলতে বিক্রি হয়ে
যেতো জলদি সারা।।
কুমড়া ফুল বিক্রি করে
বালক বাঁশকানা উঁচিয়ে
দুই টাকার টফি কিনে
বাড়ি ফিরতো নাচিয়ে।।
সিরিয়াল ৩০
"দুঃখবোধ"
জিয়াউল হক
দুঃখ আপন সঙ্গের সাথী
সঙ্গে থেকে ঘুরে।
জনম সাথী দুঃখ আমার
ছাড়ে না তো মোরে।
জনম জনম সাথে থেকে
বসত করে বুকে।
বুকের ভিতর ময়না পাখি
ছটফট করে শোকে।
আকাশ জুড়ে জোসনা তারা
ঝলমল চাঁদের আলো।
আমার জীবন দুঃখ ভরা
মেঘে ডাকা কালো।
সবারে আমি ভালবাসি
করি না তো ক্ষতি।
কেন সবাই দুঃখ দিয়ে
থামায় জীবন গতি।
ইচ্ছে করে আকাশেতে
পাখির মতো উড়তে।
দুঃখ ছেড়ে মুক্ত হয়ে
সুখি জীবন গড়তে।
৫ই নভেম্বর ২০১৮
কবিতা একশত ষাট
সিরিয়াল ২৯
"আমার নারী বন্ধু"
জিয়াউল হক
আমার যখন ষোল তার বয়স ষোল
আমার বয়স যখন ত্রিশ তার কন্যার বয়স চৌদ্দ।
বল ছিলাম আমার নারী বন্ধু লাবণ্যের কথা
সত্যি সেই লাবণ্য ছিল
তার বুকের উপর নীল ড্রেসে সাদা কাপড়ের ভি চিহ্ন সবার দৃষ্টি কেড়ে নিত।
লাবণ্য খুব হাসে না
যখন হাসে সবাই অভাগ হয়ে থাকিয়ে থাকে
ঘাড় ঘুরিয়ে চুল পিছনে নিয়ে মাথা ছোট করে নাড়া দিত।
তার এই নাড়াতে অনেকের মতো আমার মন ও নড়ে যেত।
সবাই তার আশেপাশে ঘুর ঘুর করত
এমন কি আমাদের কেষ্টু স্যার ও ক্লাসে এসে সারাক্ষণ লাবণ্যের পাশে দাঁড়িয়ে থাকে।
একদিন দুইদিন এক সপ্তাহ লাবণ্য স্কুলে আসে না
খবর নিয়ে জানতে পারলাম লাবণ্যের বিয়ে হয়েগেল।
লাবণ্যে কে খুব মনে হত
ক্লাসে তার বেঞ্চটা শূন্য লাগত
একটা সময় এসে ভুলে গেলাম।
আমার বন্ধুরা সবাই লেখাপড়া শেষ করে কেউ চাকরিজীবী,ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার,যারা মাঝপথে ঝড়ে পড়েছে তারা প্রবাসে প্রতিষ্টিত।
আমরা এখন ও আড্ডায় সোনালী,মৌ,কাকলী,লাবণ্যদের নিয়ে গল্প করি।
একদিন আমার প্রবাসী বন্ধু বাড়ি থেকে ফিরতি পথে।
একটা মহিলা উঠানে গুকনা পাতা কুড়াতে দেখি
হঠাৎ তার চোখে আমার চোখ পড়ে।
একটুর জন্য থমকে গেলাম
ও দেখি আমার দিকে এগিয়ে আসে জিজ্ঞাস করল তুই কি নীল।
আমি তো অভাগ এই অপরিচিত জায়গা আমার নাম ধরে ডাকল আবার তুই বলে।
কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বললাম হ্যাঁ নীল আমি নীল
আর আপনি?
আমি লাবণ্যে।
যে লাবণ্য আমাদের হৃদয়ে নাড়া দিত এই লাবণ্য সেই লাবণ্য নয়।
এই লাবণ্য বিধ্বস্ত বিপর্যস্ত যেন ঝড়ে তুফানে ভিজে দরজায় দাঁড়িয়ে থাকা একটা পাখি।
এই কি হাল তোমার
সেই বলে জামাই মরছে আমার।
একটা মাত্র চৌদ্দ বছরের মেয়ে খেয়ে না খেয়ে
এই তো আছি স্বামীর বিঠে বাড়ি নিয়ে।
লাবণ্যের যেন সব শেষ হয়ে গেল
তার মাঝে বৃদ্ধার ভাব এসে গেল।
তার একটি চৌদ্দ বছরের কন্য আছে
আমি, আমাদের অনেকে এখন ও সংসার শুরু করেনি।
অথচ
আমার ত্রিশ লাবণ্যের বয়স ও ত্রিশ।
সিরিয়াল ২৮
"নোয়া পয়সাওলা"
জিয়াউল হক
টিয়া অলি হতো মিয়া
পিছুদি তোয়ার ঘুরে।
অচিন মানুষও নাম ধরি
গান গাইয় সূরে।
দেশের মাঝে ভাল মানুষ
যারা ভাল নাই।
টিয়া খাই চুর বাইটপারের
বিয়াগুনে গুণ গাই।
ঘুষ খাই চুরি গরে মানুষ
মারি টিয়া কামাই
দু চার পয়সা দান গরি
সাজি যায় হাতেমতায়।।
আগে কি আচিল তারা
বেমালুম যায় ভুলি
বস্তা বইতু সারাদিন ভর
খাতুন গঞ্জের খুলি।
শিক্ষাদীক্ষা ন তাকিলে
হইয়ি শিক্ষাবিদ।
রাজনৈতিক সমাজপতি
আরো হত গীত।
চারিকিনের দি চ গো
নোয়া পয়সাওলা।
তারার এইসব কান্ড খাচিত দেখিলি
গাত উডে জ্বালা।
১৭ই অক্টোবর ২০১৮
সিরিয়াল ২৭
"প্রবাস"
জিয়াউল হক
দেওয়াল ছাড়া বন্দিশালা
নাম তার প্রবাস।
সভ্য এই পৃথিবীতে
আমরা নব্য দাস।
আমার যিনি কর্মদাতা
তিনি হুকুম দার।
ইচ্ছা অনিচ্ছা ভাল লাগা
সবই পূরণ হয় তার।
তার পরিবার পরিবারের
আমি সেবা দাসী।
সব অন্যায় সহ্য করি
আমার পরিবারের ফুটায় হাসি।
৩০শে অক্টোবর ২০১৮
সিরিয়াল ২৬
"প্রেমের জ্বালা"
জিয়াউল হক
পাখির মনে মন মজিয়ে
হলোরে কোন জ্বালা,
ভালোবাসা দেয়নি পাখি
দিলো কাঁটার মালা৷
যত্ন করে, তোরে পাখি
রাখলাম মনের ঘরে।
ভালবাসার দাগা দিয়ে
কেন গেলে ছেড়ে।
স্বপ্ন ছিল তোমায় নিয়ে
বাঁধব সুখের ঘর।
তুমি আমায় কেমন করে
করে দিলে পর।
তুমিহীনা বিরহ মজি
তুমি মজো সুখে।
আমার বুকে পাথর দিয়ে
আছ কার বুকে।
তুমি পাখি এত নিঠুর
বুঝলে না এই মন।
শূন্যে কাঁচা দেখে দেখে
হবে যে মরণ।
১লা নভেম্বর ২০১৮
সিরিয়াল ২৫
"মন পাখি”
জিয়াউল হক
আমার হৃদয়ে যতটুকু
খুশি সবই তুর।
ভালোবাসি ভালোবাসি
ডাক তুর কতো মধুর।
আমার মনে সারা বেলায়
আসে যতো আনন্দ।
সব কিছুতে আছে যে তুর
ভালোবাসার ছন্দ।
আমার জীবন রঙ্গিন তুর
ভালোবাসার ছোঁয়া।
আমি নিঃস্ব হয়ে যায় তুর
দূরে চলে যাওয়া।
আমার মনে বান্দিয়াছি
তুরে প্রাণ পাখি।
কথা দাও যাবে না তো
আমায় দিয়ে ফাঁকি।
১৬ই নভেম্বর২০১৮
সিরিয়াল ২৪
"দরদী মা"
জিয়াউল হক
মা জননী স্বর্গখনি
নাই তুলনা তাঁর,
দুনিয়াতে সেই অভাগা
মা বেঁচে নেই যার।
মাগো তুমি আছো কতো
আমার থেকে দূর।
স্বপ্নে তোমায় ডাকি ও মা
মা মা করে সুর।
মাগো তুমি আদর করো
জড়াই রাখতে বুকে।
সেই যে খোকা দূর প্রবাসে
ভালোবাসায় ধুকে।
মাগো তোমায় মনে পড়ে
দিবস ও রাত।
চোখে বাসে আদর ভরা
তোমার দু হাত।
মা জননী স্বর্গখনি
সত্য কথা তাই।
দূর প্রবাসে থেকে আজি
বুঝে গেছি ভাই।
৮ই নভেম্বর২০১৮
সিরিয়াল ২৩
"ভোটের হাওয়া"
জিয়াউল হক
নির্বাচনের দমকা হাওয়া
লাগছে সবার গায়ে,
মিছিল মিটিং জনসভা
চলছে পায়ে-পায়ে।
পাড়ায় পাড়ায় ঘুরে বেড়ায়
ভোটে প্রার্থী যারা।
সালাম জানাই দোয়া চেয়ে
ভোট চেয়েছেন তারা।
রঙিন পোষ্টার ব্যানার তোরণ
সাজে সারা দেশ।
ভোটের হাওয়া সারাদেশে
সাড়া পেলে বেশ।
মাইকে মাইকে স্লোগান দিয়ে
প্রচার চালায় প্রার্থী।
মিছিল মিটিং করে বেড়ায়
সকাল বিকাল রাত্রি।
১৫ই নভেম্বর২০১৮
সিরিয়াল ২২
"চেঙ্গুর পুল"
জিয়াউল হক
ফটিকছড়িতে থানা সদর
কাঞ্চন নগরে ফাঁড়ি।
মধ্যখানে চেঙ্গর পুলে
ডাকাত পেতে আছে আড়ি।।
থানা আর ফাঁড়ির পুলিশ
আছে সবাই ঘুমিয়ে।
কাঞ্চন নগরের মানুষ চলাচল
করে হাতে জান নিয়ে।।
কাঞ্চন নগর পাইন্দং রাঙামাটির
জনগণ হলে সচেতন।
চেঙ্গুর পুলের ডাকাত দলের
হবে ছন্দপতন।।
ওরা ডাকাত ওরা সন্ত্রাস
ওরা সংখ্যায় কত।
হইত দশ জনের একটা দল
আমরা হাজার শত।।
দশ জনের কাছে জিম্নি
মার খাই প্রতিদিন।
গতকাল সেই আজকে আমি
আগামীকাল আপনি।।
প্রতিদিন মার খাবেন টাকা
ইজ্জত জীবন দিবেন?
না,না,তাহলে আজকে ঐক্যবদ্ধ
জনতা শপথ নিবেন।।
চেঙ্গুর পুলে ডাকাত সন্ত্রাস
থেকে করিব মুক্ত।
পুলিশ প্রশাসন জনগণ জননেতা
আজ থেকে হউন যুক্ত।।
৬ই ফেব্রুয়ারি ২০১৯
সিরিয়াল ২১
"মতপার্থক্য "
জিয়াউল হক
আমি যারে ভালো বলি
তুমি বলো মন্দ তা
ভালো মন্দ বিচার করলে
হারায় ঘরে ছন্দ টা।
একটা ছাদের নীচে থেকেও
আমরা সবাই এক তো নই।
স্বার্থটাকে আঁকড়ে ধরে
মতান্তরে ভিন্ন হই।
মতান্তরে খেলা চলে
ঘরে তে আর বাহিরে।
ভিন্নমতের সম্মান টুকু
দেশে যাচ্ছে হারিয়ে।
সত্য মিথ্যা ধার ধারে না
লিপ্ত আছে ভেদাভেদ।
স্বার্থটাকে আঁকড়ে ধরে
করে শুধু জেদা জেদ।
শত মতের শত দলে
সুন্দর হবে পৃথিবী।
ত্যাগ করি নিজ মতে
আকঁড়ে ধরার সংস্কৃতি।
২৯শে নভেম্বর ২০১৮
সিরিয়াল ২০
ভালোবাসার বাংলা ভাষা
জিয়াউল হক
নানান দেশের নানান মানুষ
সাথে থাকি ভাই।
আপন মানুষ খুঁজে বেড়ায়
মিলা বড় দায়।।
উর্দু ফারসি ইংলিশ আরবী
আরো কতো কথা।
নিজের ভাষায় না বলা তে
বুকে লাগে ব্যথা।।
ঘরে ফিরে ভাই বন্ধুদের
যখন কাছে পাই।
ইচ্ছে মতো বাংলা বলে
মনের জ্বালা মিটাই।।
তখন বুঝি আমার ভাষায়
আছে কতো মধু।
সারাটা দিন বলতে চাই মন
মাতৃ ভাষা শুধু।।
প্রবাসাতে বন্দি জীবন
ইচ্ছে হয় না পূরণ।
ভালবেসে বাংলা ভাষা
বুকে করি ধারণ।।
২৩ই জানুয়ারি ২০১৯
সিরিয়াল ১৯
"হারিয়ে যাওয়া বন্ধু"
জিয়াউল হক
বাহির আমার ঝলমল
ছড়ায় কতো আলো।
মনের মাঝে আগুন জ্বলে
জীবন হলো কালো।
বুকের ভেতর কীসের দহন
জানেনা তো কেউ,
মন দরিয়ার দুঃখ নদী
তুলছে ব্যথার ঢেউ।
সবার মাঝে থেকে আমি
লাগে বড় একা।
ভালোবাসার বন্ধু আমার
কতো কাল নাই দেখা।
তোমার জন্য বন্ধু আমার
মনে উঠে ঢেউ।
কোথায় আছে বন্ধু আমার
খবর দাও কেউ।
খুঁজে পেলে বন্ধু তোমায়
মিটবে মনের জ্বালা।
সারা জীবন আপন করবো
বদল করে মালা।
২২শে নভেম্বর ২০১৮
সিরিয়াল ১৮
"বসন্ত ও রুপসী"
জিয়াউল হক
বনের কোকিলের ডাকে মনে সূর উঠে
প্রকৃতিতে নানান বাহারি ফুল ফুটে
ঋতু রাজ বসন্ত এল, মনে বসন্ত এল।
ফাগুনে আমের বনে মুকুলের ঘ্রাণে
দক্ষিণা হাওয়া এক রুপসী দোলে মনে।
শীতের খোলস খুলে প্রকৃতির নব রুপ ধারণ
তাই বসন্ত রুপসীকে করে বরণ।
ঝড়া শুকনো পাতা মড়মড়ে বাণী
রুপসী আর বসন্তের প্রেম কাহিনী।
হলুদ সাঁজে রুপসী কানে দোল
বসন্ত সেঁজেছে প্রকৃতির ফুটিয়ে ফুল।
বনের কোকিলের ডাকে মনে সূর উঠে
প্রকৃতিতে নানান বাহারি ফুল ফুটে
ঋতু রাজ বসন্ত এল, মনে বসন্ত এল।
সারা বসন্ত জুড়ে রুপসীদের রুপে মাতে
বসন্ত আপন লীলা খেলে তাদের সাথে।
অবশেষে।
রুপ, রুপসীদের মাতিয়ে বসন্ত যায় চলে
আবার আসে ফিরে
আবার মিশে নব রুপ রুপসীর দলে।
৫ই ফেব্রুয়ারি ২০১৮
সিরিয়াল ১৭
"তুমি এলে না"
জিয়াউল হক
প্রবাহিত নদীর কত জল সাগরে এল
কত জন এল গেল
শুধু তুমি এলে না
তোমার বন্ধদ্বার খুলানোর জন্য
কত কূটনীতিক,কত নেতার তৎপরতা
এমন কি প্রধানমন্ত্রী ও এলো
তবু তোমার অভিমান ভাঙ্গল না।
বন্ধ করেছ তো বন্ধ, রুদ্ধ করেছ তো রুদ্ধ।
এত অভিমান দুবাইয়ের ভিসা তুমি এলে না
আজ পাঁচটি বছর তোমার অপেক্ষায় প্রহর গুনি
মালিক আরবাব পক্ষের অকারণে বকাজকি শুনি।
সেই জানে জেনেছে আমার যাবার দ্বাররোদ্ধ
তাই তো খুব সহজে বলে
যা যা, যা,অন্যতরে চলে।
বেতন ভাতা বৃদ্ধি সেই তো ভুলেছি অনেক আগে
বুকে সাহস নাই কোন অন্যয়ের প্রতিবাদ করি না
শুধু অপেক্ষায় আছি কবে আমার মুক্তি হবে
কবে তুমি আসবে কবে ভিসার দ্বার খুলবে।
ঐ দিকে হাজার তরুণ স্বপ্ন বুনে
তোমার ফিরে আশার দিন গুনে।
ভাই বন্ধুদের জিজ্ঞাস করে বেতার টেলিভিশনে খবর ধরে।
জানতে চাই, তুমি আসছ কি? ফিরে,কবে আসবে
তুমি এলে না অভিমানী।
তুমি নেই বলে সব থেকে ও ফিরে যেতে হচ্ছে
বন্ধ হচ্ছে রুজি রোজগারের দ্বার।
এত টা পথ তোমায় সাথে নিয়ে চলেছি
আজ মাঝ পথে তুমি নাই।
বলো আমি কি সামনে যাব, না পিছনে, কি উপায়।
আজ মিনতি করি তুমি ফিরে এসো
তুমি ফিরে এসো বাংলাদেশীদের মাঝে
হে ভিসা হে দুবাইয়ের ভিসা।
২০ই নভেম্বর ২০১৭
সিরিয়াল ১৬
বাহাদুর
জিয়াউল হক
সব শালারা মাদারি চুদ
ধর্ষকের চিরতে পারেনা বাল।
অসহায় এক মা কে পিটিয়ে
হত্যা করলো কাল।
অবুঝ শিশু মা হারিয়ে
কেঁদে বুকটা ভাসায়।
হারামিরা খুনিরা বল
তারা মা পাবে কোথায়।
তুই শালারা দুই দিন আগে
খুন হতে দেখ দাঁড়ায়।
খুব বাহাদুর হিরো সাজো
এক নারি কে পিটাই।
সিরিয়াল ১৫
"ধুরুং খাল"
জিয়াউল হক
ধুরুং খালে পানি এলো
খবর এলো কানে।
বাঁশের লাকড়ি ধরে নাকি
লোকজন কূলে টানে।।
এমন খবর পেয়ে আমি
গেলাম ধুরুং খালে।
সত্যি দেখি লাকড়ি তুলে
সবাই সমান তালে।।
হাঁটু পানি নেমে গেয়ে
হাতে টেটা বাঁশ।
মনের সুখে লাকড়ি ধরে
ভরছি চারি পাশ।।
জিয়াউল হক
৯ই জুলাই ২০১৯
সিরিয়াল ১৪
"আমার গায়ের পরিচয়"
জিয়াউল হক
আমার গায়ের পরিচয় নাম তাহার কাঞ্চন নগর
ছন্দে ছন্দে বলি কেনো তার যে এতো কদর।
দক্ষিণেতে রাবার বাগান শিল্পে রাখে অবদান
উত্তরেতে ধুরুং খালে মাঝি গাই যে গান।
পূর্ব দিকের চা বাগানের সাথে তুলনা কিসে
পশ্চিমেতে পাশের গায়ে,আছে মিলে মিশে।
আমার গায়ের আলো বাতাস গায়ের মাটি
সোনা তো নয় সোনার চেয়ে আরো বেশি খাঁটি।
জ্বলে গায়ে জোনাকি ই ঝিকিমিকি আলো
জাড়ি সাড়ি ভান্ডারী গান,মন করে ভালো।
আমার গায়ের কৃষক কৃষাণ কঠুর পরিশ্রমি
খেতে ফসল ফলাই গায়ের নামটা করে দামী।
মানিক পুরের বিলে দোলে সোনালী ই ধান
কাঞ্চন নগরের মুলা বেগুন দেশ জোরে মান।
ধুরুং খালে নতুন দুইটি সেতু হলো যুক্ত
যোগাযোগের ভোগান্তিতে হলো তারা মুক্ত।
নতুন নতুন রাস্তাঘাট প্রতিদিন হচ্ছে নির্মাণ
ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ বাতি জ্বলে বাড়ে জীবন মান।
নীল আসমানের নীলের খেলা দেখতে যদি চাও
কাঞ্চন নগর হিজ্জা বিলটা একবার ঘুরে যাও।
রুস্তুম ফকির জামে মসজিদ অপরূপে সাঁজে
নতুন ঝর্ণা নাম করেছে দশ গ্রামেরও মাঝে।
সন্ধ্য হলে পানি ছেড়ে জ্বলে লাল নীল বাতি
দূর দূরান্ত থেকে দেখতে আসে সকল জাতি।
মানত করে সকলে মনের আশা করতে পূরণ
জাতি ধর্ম বর্ণ সবাই তারে করে স্বরণ।
হুজুর আব্দুল হাদী,হুজুর আব্দুল গণী
খুঁজে পাবে তাদের গাউছে ভান্ডারীরও জীবনী।
গাউছে ধনের পায়ের নিকট বসে হয়ে দাস।
সেই দাসত্ব স্থান পেল মাইজ ভান্ডার ইতিহাস।
সুন্দর শাহ মালেক শাহ আরো পীর দরবেশ ভরা
সুলতান হুজুর,জানে আলম জ্ঞানের প্রদীপ জ্বালে তারা।
নানান পেশায় দেশ বিদেশে স্থান করে দখল
ডাক্তার মাষ্টার প্রবাসেতে হয়েছে যে সফল।
ফটিকছড়ি ইতিহাসে কাঞ্চন নগর স্থান
স্বাধীনতায় গায়ের মানুষ রক্ত করছে দান।
তিনশতো বছরের উকিল বাড়ি জামে মসজিদ
সতের শতকের আছে শিব মন্দিরের ভিত।
কাঞ্চন নগরের মানুষ ভালো,আছে নানান গুন
দেশ বিদেশে মানুষ বলে এই কথাটা শুনুন।
শিল্পী রং তুলিতে আঁকে এই গায়ের ছবি
পাহাড় নদী অরণ্যের ছন্দে মিলন ঘটায় কবি।
সকল জাতি ধর্ম যখন আছি মিলেমিশে
সুখ শান্তি বিরাজ করে দুঃখ আছে কিসে।
২৬ই আগষ্ট২০১৯
সিরিয়াল ১৩
"মাহিন নাহিন"
জিয়াউল হক
মায়েরও কুল জুড়ে এলো দুইটি পুত্র সন্তান
বাবা বলে ভালোবেসে খোদা করছে দান।
নাম রাখে যে ছন্দ মিলে তাদের মাহিন নাহিন
ঘরে তারা ভালোবাসার আলো ছড়ায় সারাদিন।
ধীরে ধীরে বড় হয়ে উঠে দুইটি ছেলে
পাড়ার সবার সাথে মিলেমিশে তারা খেলে।
ছেলের কল্যাণ কথা ভেবে বাবা হলো প্রবাসী
দিন রাত কেটে মরে ছেলের মুখে ফুটাই হাসি।
ছেলে তাদের ধরে এখন নানান রকম বায়না
বিদেশ থেকে পাঠাও বাবা টিয়া পাখি ময়না।
টিয়া পাখির সাথে দিও বেশি করে ব্যাটারি
খেলতে খেলতে যেনো শক্তি না পুড়াই তাড়াতাড়ি
বাবা বলে ওরে সোনা মানিক মাহিন নাহিন
সবি দিবো তোমাদের ধৈর্য্য ধরো আর কয়টা দিন।
নানান দোকান ঘুরে বাবা জোগাড় করে খেলনা
টিয়া পাখি,বিমান,গাড়ি,কিছু তো নয় ফেলনা।
ছেলে দুইটি মা কে বলে বাবা আসবে কবে
বাবা আসলে আমাদেরও কতো খেলনা হবে।
মাহিন বলে আকাশেতে আমি বিমান উড়াবো
নাহিন বলে সড়ক দিয়ে আমি গাড়ি চালাবো।
ছেলের খুশি দেখে মায়ের চোখে এলো পানি
খোদার কাছে দুহাত তুলে পৌছায় কল্যাণ বাণী।
ছেলের জন্য বাবা নতুন ভিটে করছে ভরাট
তাতে মাটি কেটে একটি পুকুর করছে ভিরাট।
নতুন ভিটে করবে তিনি একটি দালান ঘর
সুখে থাকবে মাহিন নাহিন সারাজীবন ভর।
সেই ভিটেতে খেলা করে তারা প্রতিদিন
পুকুর ঘাটে পড়ে ডুবে গেলো মাহিন নাহিন।
পুকুর গভীর জলে গেয়ে ভাই ভাই রাখে ধরে
বুকে জড়াই চলে গেলো খোদার দরবারে।
পাড়ার সকলে মিলে পুকুর থেকে তুলে লাশ
কেঁদে কেঁদে মা বাবা বলে এই কি সবর্নাশ।
দুইটি ছেলে পাশাপাশি কাঠে পরাই কাপন
সে-ই পুকুর পাড়ে এক সাড়িতে দিলো দাপন।
৫সেপ্টেম্বর ২০১৯
সিরিয়াল ১২
"বয়স সন্ধি"
জিয়াউল হক
পাড়ার সেরা সেই ছেলেটি চুলে মাখতো জেল
এখন খুঁজে ঘরের কোণে-ই নারিকেল তেল।
মাঝখানে তে সি'তে পেড়ে ঝোলানো তার চুল
ঘাড় ঘুরিয়ে অকারণে দিতো মাথা দোল।
মাথা ভর্তি লম্বা লম্বা,চুল ছিলো তার
কোথায় গেলো চুল,হাত দিয়ে দেখে বারবার।
অবশিষ্ট চুল যে তাহার ধরছে তাতে পাকা
সোজা হয়ে দাঁড়ায় না সেই মেরুদণ্ড বাকা।
জিন্স প্যান্ট পড়ে ছেলে করতো নানা ভংগী
এখন পরে সেই বাপদাদার পুরানো-ই লুঙ্গি।
বুড়াবুড়ি দাদা দাদী দিতো যখন কাঁশি
ব্যঙ্গ করে সেই ছেলেটি দিতো অট্টহাসি।
এখন ছেলে কাঁশে সারা রাতে, কু কু করে
নানান জটিল রোগে ভোগে,দিন দিন কষ্টে মরে।
ধন সম্পদে ভরপুর অন্যের দুঃখ করতো উপহাস
শেষ জীবনে এসে তাহার কষ্টে কাটে বার মাস।
কথায় কথায় ঝগড়া করে হাত উঠাতো গায়ে
খুঁজে তাদের ক্ষমা চাইতে,হাতটা দিয়ে পায়ে।
যৌবন কালে সেই ছেলেটার মরণ হয়নি ভয়
বার্ধক্যয়ে এসে বুঝে মৃত্যু হয় না জয়।
২১শে আগষ্ট ২০১৯
সিরিয়াল ১১
আমি
জিয়াউল হক।
লোকে বলে দুঃখ কেন
ভাসে তোমার চেহারায়
আমি বলি আমার পাশের
দুঃখ গুলি ভাবায়।
অনাহারি দেখলে বুকে
লাগে ভিষণ ব্যাথা
কেমন করে খাওয়াই তারে
ভাবি সে ই কথা।
লোকে বলে নীরব থাকি
কথা নাই কেন মুখে।
আমি বলি কথা শুনে
লিখি মনের সুখে।
১০ডিসেম্বর ২০১৯
সিরিয়াল ১০
"প্রেমের পরশ"
জিয়াউল হক
ময়নামতির ভালোবাসা
এই যুগে তে নাই।
এখন সবাই ভালোবাসার
মধু খেতে চাই।।
প্রেমের নামে ভন্ডামিতে
ভরে গেছে ভাই।
সত্যকারের ভালোবাসা
মিলা বড়ো দায়।।
ভালবাসার দিবস এলো
আরো এলো ক্ষণ।
এতো দিবস চাই না যদি
থাকে সুন্দর মন।।
মনের মিলে ভালোবাসা
ফুটে রঙ্গিন ফুল।
রূপে ধনে ভালোবাসা
ভাঙ্গে মনের কূল।।
ভালোবাসার আকাল যাচ্ছে
ব্যথা মনে তাই।
প্রেমের পরশ ফুটিয়ে দাও
জগত পানে ভাই।।
১৪ই ফেব্রুয়ারি ২০১৯
সিরিয়াল ৯
"বোধদয়"
জিয়াউল হক
আজ বাধ ভেঙ্গে দলে দলে ছুটে ছুটে আয়।
শিকল খুলে হাত টা তুলে মিছিলে তে যায়।
কতো আরো বন্দি করে রাখবি যে ঘরে।
ঘুরবো আমি দেখবো আমি মুক্তির মিছিল দরে।
আমি জানি আদি পিতা জানি মুসলিম পিতা।
এইবার খুঁজি আমার দেশের কে সেই জাতির পিতা।
দেশটা এলো কেমন করে কারা করল স্বাধীন।
এইবার আমি জানবো ছিলাম কাহার অধীন।
বুকের তাজা রক্ত দিলো জীবন দিলো যারা।
ভাষার লড়াই স্বাধীন সংগ্রাম বিজয় আনলে কারা।
এইখানে কেন উড়েনা তো লাল সবুজের নিশান।
আমার কন্ঠে সুর উঠেনা সোনার বাংলা গান।
এই সব প্রশ্ন উত্তর দাও জানাও সত্যে ইতিহাস।
মিথ্যা জেনে কেন থাকবো অন্যে কারো দাস।
কোরান হাদিস সবই শিক্ষায় হবো মোরা শিক্ষিত।
শিক্ষার আলো চড়াই গড়িব সমাজ আলোকিত।
বাংলা গণিত ইংরেজি কে করে দাও মুক্ত।
ডাক্তার মাষ্টার ইঞ্জিনিয়ারে আমরা হবো যুক্ত।
৬ই নভেম্বর ২০১৮
সিরিয়াল ৮
"ইয়েমেনি শিশু"
জিয়াউল হক
এক পূর্ণিমার রাতে আকাশের দিকে থাকিয়ে
ইয়েমেনে এক শিশু বলে হে খোদা বড় রুটি টা আমাকে দাও।
আমি যে কতো রাত দিন অনহারে ক্ষুদায়
আমার পেটে জ্বলে।
তুমি তো দয়ালু অনাহারীর দাও আহার তবে কেন আমার প্রতি অবিচার।
তুমি কি দেখ না আমার হাড্ডিসার দেহ।
বুকের পাজর গুলো শুকিয়ে মন মরে করে হাহাকার।
তুমি আমার সৃষ্টিকর্তা তুমি আমার লালন পালনকর্তা।
আমায় তো কেউ লালন করেনা পালন করে না।
দু মুঠো খাবার তুলে দেয়নি ক্ষুদার যন্ত্রণায় কান্নায় চোখের পানি শেষ।
তবু তোমায় মানি নেই কোন অভিযোগ।
আমার যতো অভিযোগ এই দুনিয়ার নিষ্টুর শাসকের প্রতি।
আমার বেঁচে থাকার প্রার্থনা তোমার দরবারে।
খোদা দয়াময় আমায় কবুল কর আমার মুখে খাবার দাও।
আর না হয়।
নিয়ে যায় তোমার দরবারে খেলা করবো জান্নাতের শিশুদের সাথে।
তখন আকাশ থেকে ঝলসানো এক টুকরো দেয়ে আসে।
ইয়েমেনি শিশু ভাবে খোদা তার প্রার্থনা কবুল করেছে।
আকাশের বড় রুটি টা তার খাওয়ার জন্য পাঠাইছে।
রুটি যতো নিচের দিকে আসে তার ছোট ছোট হাত গুলো তত উপর উঠে।
রড় রুটি টা আসল ছোট্ট হাতে স্পর্স হতে ভিকট শব্দে হাড্ডিসার দেহটা মাঠিতে মিশে গেল।
২৬শে নভেম্বর ২০১৮
সিরিয়াল ৭
বীরের মা বীরাঙ্গনা
জিয়াউল হক।
মা মা কোথায়,কোথায় তুমি আমি এসেছি ফিরে
তোমার জন্য বিজয় নিয়ে দেখা দাও নীড়ে।
ওহ রাগ করেছ চুরি করে যুদ্ধে গেলাম চলে
দেখা দাওনা কথা কও না তাই বলে।
দেখ মা গো অপবিত্র করে তারা তোমার ভূমি
সন্তান হয়ে চুপ করে কেমনে থাকি আমি।
যুদ্ধে গেয়ে রক্ত দিয়ে বিজয় ছিনিয়ে এনেছি
পাকহানাদার মুক্ত স্বাধীন এই দেশ করেছি।
এতো কথা বলে খোকা মা কেনো না শুনে
দরজাটা খুলে দেখে মা লুকিয়েছে কোণে।
জরাজীর্ণ ছেঁড়া শাড়ি পড়ে মা বসে আছে
জড়িয়ে ধরতে কাছে গেলে বলে এসো না কাছে।
মায়ের মুখ খুলে চিৎকার করে বলে অপবিত্র
আমি অপবিত্র তারা আমার ইজ্জত নিলো লুটে।
খোকা বলে তোমার ছেলে যুদ্ধে গেয়ে বীর
তুমি বীরের মা বীরাঙ্গনা উন্নত মম শির।
সিরিয়াল ৬
বিজয় এনেছি।
জিয়াউল হক
মাগো তুকে মুক্ত করব
বলে শপথ নিয়েছি।
পাকহানাদার বুকটা ছিঁড়ে
স্বাধীন এই দেশ এনেছি।।
তুর বুকেতে উড়ায় লাল
সবুজে বিজয় নিশান।
ঘুরে বেড়ায় আমার সোনার
বাংলা গেয়ে গান।।
পাখি উড়ে ঐ আকাশে
নদী ছুটে সাগরে।
মুক্ত স্বাধীন হয়ে সবাই
বিজয় নিয়ে ফিরে।।
তুর ছেলেরা আজ এসেছে
ফিরে বিজয় নিয়ে।
বুকে জড়িয়ে নাও মাগো
আদর স্নেহ দিয়ে।।
বাংলাদেশের বিজয়ে আজই
উল্লাসিত জাতি।
জয় বাংলা জয় বাংলা
স্লোগান রাজ পথ মাতি।।
জিয়াউল হক
আরব আমিরাত দুবাই।
সিরিয়াল ৫
শহিদ মিনার।
জিয়াউল হক
দাদা ডাক তো মা মা করে
বাবাও ডাকে তাই।
ওরা বলে আমার এই ডাক
মুছে দিবে ভাই।।
বললে হলো এতো সহজ
মিটে যাবে আবদার।
মায়ের ভাষায় কথা বলা
সবার আছে অধিকার।।
সাবধান করলাম বারণ করলাম
আর নয় বাড়াবাড়ি।
আমরা ভাষা আমার মা ডাক
কেনো কাড়াকাড়ি।
অস্ত্র দিয়ে ভয় দেখাবে
এমন তাদের আশা।
রক্ত দিবো জীবন দিবো
ছাড়বো না ভাষা।।
তাক করিলে বন্দুকের নল
সব কিছুতে নিষেধ।
একুশেতে রক্ত দিয়ে
সবই করলাম উচ্ছেদ।।
রফিক শফিক বরকতের
জীবন নিলো সীমার।
তাদের নামে বাংলার বুকে
হলো শহিদ মিনার।।
আমরা স্মরণ করি তাদের
ফেব্রুয়ারির একুশে।
বেঁচে থাকবে সারা জীবন
মা ডাকেতে মিশে।।
সিরিয়াল ৪
ভালোবাসার বাংলা ভাষা
জিয়াউল হক
নানান দেশের নানান মানুষ
সাথে থাকি ভাই।
আপন মানুষ খুঁজে বেড়ায়
মিলা বড় দায়।।
উর্দু ফারসি ইংলিশ আরবী
আরো কতো কথা।
নিজের ভাষায় না বলা তে
বুকে লাগে ব্যথা।।
ঘরে ফিরে ভাই বন্দুদের
যখন কাছে পাই।
ইচ্ছে মতো বাংলা বলে
মনের জ্বালা মিটাই।।
তখন বুঝি আমার ভাষায়
আছে কতো মধু।
সারাটা দিন বলতে চাই মন
মাতৃ ভাষা শুধু।।
প্রবাসাতে বন্দি জীবন
ইচ্ছে হয় না পূরণ।
ভালবেসে বাংলা ভাষা
বুকে করি ধারণ।।
২৩ই জানুয়ারি ২০১৯
সিরিয়াল ৩
"খোদেজা"
জিয়াউল হক
এই পৃথিবীর স্বর্গে থেকে সুখি নয় খোদেজা।
বাংলার পথে ঘাটে খুঁজে বেড়ায় পরিচয় টা।।
চুয়াত্তরের দুর্ভিক্ষেতে ছেড়েছ এই দেশ।
বিদেশী মা বাবা পরিচয় আছে বেশ।।
শিক্ষাদীক্ষা স্বামী সন্তান সবি আছে তার।
পরিপাটি সাজানো যে খোদেজার সংসার।।
এতো কিছু থাকার পরে তবু নয় সেই সুখি।
খুঁজে বেড়ায় শিকড় সন্ধানে কে জন্মদাতা জন্মভূমি।।
একবার যদি জন্মভূমি মা বাবার দেখা পায়।
জীবনের বড় চাওয়া তার পূরণ হয়ে যায়।।
চুয়াল্লিশ বছর আগে লঙ্গরখানা ছবিটা।
প্রমাণ বলেন স্মৃতি বলেন অবলম্বন শুধু তা।।
বাংলার পথে ঘাটে ঘুরে খোজেদা হয় ক্ষলান্ত।
পিতা মাথা পরিচয়হীন ফিরে যায় মন অশান্ত ।।
দেশের সবার কাছে দিয়ে গেলো একটি বার্তা।
পাও যদি তাদের বলিও খুঁজে তোমার খোদেজা।।
২৫ শে জানুয়ারি ২০১৯
সিরিয়াল ২
"কবিতার জন্য"
জিয়াউল হক
কবিতা যখন আমায় ছেড়ে যায়
তখন ছন্দ কথামালা মিল হয় না।
হৃদয় গুমোট হয়ে থাকে আকাশের মেঘের মতো।
ধুমধাম শব্দ হয় বিজলি চমকায়।
আমি চটপট করি তৃষ্ণান্ত পথিকের মতো।
বুক হাহাকার করে বিরহ যন্ত্রণায়।
অনিদ্রা বধ হজম অকারণে রেগে যায়
সব সুন্দর কে কুৎসিত লাগে।
শুধু কবিতার জন্য।
কবিতা যখন ফিরে আসে আমার মাঝে
তখন ছন্দ কথামালা মিল বন্ধন হয়।
হৃদয় হাসে আকাশ থেকে বৃষ্টি ঝরে
শান্ত শীতল হাওয়া বয়ে যায় মনে।
অস্থিরতা চলে যায় তৃষ্ণা মিটে অমৃত সুধায়
ভালবাসায় ভরে যায় এই হৃদয়।
নিদ্রায়মগ্ন রাগ কি সেই ও ভুলে যায়
সব সুন্দর সুন্দরে ভরে যায় জীবন।
শুধু কবিতা জন্য।
কবিতা একশত সত্তর
৯ডিসেম্বর ২০১৮
সিরিয়াল ১
"লোভ"
জিয়াউল হক
এক কষ্ট আমার বুকের ভিতর জেগেছে নতুন করে।
সারাক্ষণ ব্যথায় যন্ত্রণায় কুড়ে কুড়ে খাই মনের ঘরে।
আমি অবিরাম বড়ই ক্ষলান্ত দেহ মন ভেঙে যাচ্ছে।
আমার যেন সব শেষ হয়ে আশার প্রদীপ যে নিভে আসছে।
আমার দুঃখ এলে সাগর তীরে যায় সাগর ঢেউ দুঃখ দূরে।
আজ মনে হয় ঢেউ যেন আমার হৃদয় ভেঙ্গে চূর্ন করে।
শিশিরে সকাল পরন্ত এই বিকাল মন বসে না কিছুতে।
আকাঙ্খা মন যে চটপট করে অধিক পূর্ণতা খুঁজিতে ।
আমার কিছু নাই অসুখি মনে হয় সব কিছুতে যে শূন্যতা।
আমি তো দু বেলা পেট পুরো খাচ্ছি ভাল আছি নেই অপূর্ণতা।
তবে কেন এমন মনে হয় বারেবারে অসহায় বিধ্বস্ত নিঃস্ব।
আমার আকাঙ্খা আমার লোভ যে বাড়ছে বড্ড বেশি কি করি।
নিজেকে দেখেছি অন্যের সুখের ছায়ার মাঝে যে বেশি।
আমার আমি কে ছেড়ে আশেপাশে পূর্ণতা কে খুব দেখি।
আমার পাশের দুঃখের দিকে যে চোখ পড়েনি আজ এখন।
কতো জন দু বেলা পেট পুরে খাই না অনহারে দিন কাটায়।
কতো দুঃখ কষ্ট যে জীবন চলছে তাহা আমি চোখে দেখিনা।
দেখি বিলাসিতা উচ্চ আকাঙ্খা তে আমার হৃদয় পুড়ছে।
কবিতা একশত চৌষট্টি
১৩ই নভেম্বর ২০১৮
Comments
Post a Comment